প্লাটফর্মে রাত কাটানো অসহায় বৃদ্ধাদের দুর্গা প্রতিমা দর্শন নবদ্বীপ শহরে*

    কৃষ্ণনগর, সমীর দাস :                                    "কত বছর দুর্গা পূজোতে ঠাকুর দেখিনি আজ ঠাকুরের মুখ দেখে খুব ভালো লাগছে , মা ইনাদের মঙ্গল করুন"--এমনই অভিমত ব্যক্ত করেছেন ৭২ বছর বয়সের  এর লক্ষী গাঙ্গুলি। কেউ দশ বছর আবার কেউ আরও বেশী সময় ধরে দুর্গাপূজাতে ঠাকুর দেখেনি।রাত্রিবাস বলতে ঐ প্লাটফর্মের ছাউনি,সেটাও এখন নেই।রাত কাটছে খোলা আকাশের নীচে। ট্রেনের নিত্যযাত্রীদের কাছে থেকে হাত পেতে যা জুটতো তাতেই আশে পাশের হোটেল থেকে খাবার কিনে কোনো রকমে দিন কেটে যেত ।এখন ট্রেন চলাচল বন্ধ ফলে, হাতটা পাতবে কার কাছে? এই অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন প্লাটফর্মে রাত্রিবাস করা এই অসহায় মানুষগুলো।সাত মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলো ট্রেন চলাচল বন্ধ। 

এদিকে পূজো শুরু। নতুন বস্ত্র তো দূর অস্ত পেট ভরানোর চিন্তা।এই অসহায় মানুষগুলোর জন্য এগিয়ে এসেছে কৃষ্ণনগর শহরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন "আনন্দধারা"।প্রায় দুইমাস ধরে প্রতিদিন ৫০ জন অসহায় মানুষের জন্য একবেলা রান্নাকরা খাবারের ব্যবস্থা করছে এই সংগঠন। কোনোদিন মাংসভাত,কোনোদিন মাছভাত আবার কোনো দিন ডিম,সব্জীভাত।রুটি, লুচি,আলুরদমও দেওয়া হয়। পূজোর আগে এই অসহায় মানুষগুলোর সাথে শহরের অসহায় রিক্সাচালক দের মিলিয়ে ৯০ জনকে নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। 

ষষ্ঠীর দিন দুপুরবেলা এই অসহায় মানুষগুলোকে আহার করিয়ে  রিক্সাতে করে ঘুরে নবদ্বীপ শহরের ১৫ টিরও বেশী পূজামণ্ডপ দেখানোর ব্যবস্থা করে এই সংগঠন । সংগঠনের কর্ণধার রাজু পাত্র আমাদের জানান," স্টেশন চত্বরে খোলা আকাশের নীচে রাত্রি বাস করা অসহায় বয়স্ক মানুষগুলো ঠিক মতো চলতে ফিরতে পারেন না, অনেক বছর শহরের দুর্গা প্রতিমা দর্শন করা সম্ভব হয়নি।এই মানুষগুলোকে দুর্গা প্রতিমা দর্শন করাতে পেরে খুব ভালো লাগছে।ওরাও খুব আনন্দ পেয়েছে।আগামীদিনেও যাতে ওরা এইভাবে প্রতিমা দর্শন করতে পারে, আমরা পাশে থাকবো। "

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

**বসন্ত রঙে মেতে উঠল বেলঘড়িয়া নিউ বাসুদেবপুর রোড অধিবাসী**

পূর্ব কলকাতায় গাঙ্গোর মহোৎসব উদযাপন :

**বাংলার সন্মান বেঙ্গল এক্সিলেন্সি অ্যাওয়ার্ড ২০২০**