*অখিল ভারতীয় কিষাণ সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটি (এআইকেএসসিসি), পশ্চিমবঙ্গ শাখা*


*প্রেস স্টেটমেন্ট | ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১*
*কেন্দ্রের কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে বাংলার প্রতিটি কৃষক পরিবারের পাওনা ১৪০০০ টাকা বঞ্চনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাল অখিল ভারতীয় কিষাণ সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটি* 

*~ কৃষকের টাকা পাওয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বিজেপি’র বাংলায় নির্বাচনী সাফল্য কে সংযুক্তে করার অপচেষ্টাকে ধিক্কার জানাচ্ছে এআইকেএসসিসি* 

*~ এআইকেএসসিসি’র  দাবি: রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের সমন্বয়ে অবিলম্বে ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজ্যের সব কৃষকের এই বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে* 

*~ এআইকেএসসিসি ঘোষণা: পাওনা টাকা আদায়ের দাবিতে এআইকেএসসিসি’র শরিক সংগঠনেরা কৃষক অধিকার যাত্রা শুরু করছে – প্রথম যাত্রা সুন্দরবন অঞ্চলে– এর পরে সব জেলায় যাত্রা হবে* 

*~ এইআইকেএসসিসি’র শরিক সংগঠনেরা পঞ্চায়েত, ব্লক ও জেলা স্তরে কৃষকদের নিয়ে গণ-বিক্ষোভ সংগঠিত করবে* 

*~ কিষাণ সম্মান নিধির পাওনা টাকা বাংলার কৃষকদের অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য এআইকেএসসিসি প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, বাংলার সব  সাংসদ ও বিধায়কদের দাবিপত্র পাঠাবে* 
  

*কোলকাতা, ৯ই ফেব্রুয়ারী,২০২১:* ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাস থেকে বাংলার ৭০ লাখ কৃষকের কিষাণ সম্মান নিধি স্কিমের হকের পাওনা মিটিয়ে দিতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছাকৃত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ অ-ব্যবস্থা, অবহেলা এবং উদাসীনতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এআইকেএসসিসি। মনে রাখতে হবে যে কিষাণ নিধি স্কিম জনগনের অর্থে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রকল্প যা ১লা ফেব্রুয়ারী, ২০১৯ তারিখে ঘোষিত হয়েছিল কিন্তু এটা প্রযোজ্য করা হয় ১লা ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখ থেকে, অর্থাৎ ঘোষণার তারিখের আগের থেকে। এই স্কিমের আওতায় ভারতের সমস্ত কৃষক প্রতি বছর ৬০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য। ২,000 টাকার ৩ কিস্তিতে এই  সহায়তা দেওয়া হবে, যার নির্দিষ্ট তারিখ ১লা এপ্রিল, ১লা আগস্ট  এবং ১ লা ডিসেম্বর। দুর্ভাগ্যক্রমে,  শুরু থেকেই বাংলার কৃষকরা এই স্কিমের অর্থ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন কারণ রাজ্য সরকার আবেদনকারী কৃষকদের তথ্য যাচাই করে দেয়নি। কেন্দ্র সরকারও তার নিজস্ব তথ্যভাণ্ডার এবং ব্যাবস্থার সাহায্যে বাংলার কৃষকরা যাতে এই অর্থ প্রদান পান তা নিশ্চিত করার জন্য কোন চেষ্টা করেনি। । তৃনমূল দলের রাজ্য সরকার এবং বিজেপি দলের কেন্দ্র সরকারের এই ছিনিমিনি খেলার কঠিন এবং দুর্ভাগ্যজনক ফল বাংলার কৃষকদের আজও ভোগ করতে হচ্ছে এবং আজ অবধি ২০০০ টাকা করে ৬টি কিস্তির (মোট ১২০০০) টাকা তাদের পাওনা রয়েছে। আবার ১লা এপ্রিল ২০২১ সপ্তম কিস্তির আরও ২০০০ টাকা তাদের পাওনা হয়ে যাবে। তাহলে, বাংলার প্রতি কৃষকের মোট ১৪,০০০ টাকা পাওনা হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তৃনমূল এবং বিজেপি’র হীন রাজনীতির জন্য একটি পয়সাও তারা পাচ্ছেন না। বাংলার কৃষকরা স্কিমের আর্থিক সহায়তা পাবার  জন্য অনবরত দাবি জানিয়েছেন কিন্তু তাদের কথায় কেউ কর্ণপাত করেনি। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য বিধানসভায় বলেছেন যে রাজ্য সরকার কেন্দ্র সরকারকে চিঠি লিখে জানিয়েছে যে রাজ্য সরকার তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া দ্রুততার সাথে করে দিতে সম্মত হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন যে কেন্দ্র সরকারের পোর্টালে রেজিস্ট্রিকৃত ২২ লাখ কৃষক (যে সংখ্যা বরিষ্ঠ বিজেপি নেতারা ক্রমাগত দাবি করে আসছেন) আছে, তার মধ্যে রাজ্য সরকার ৬ লাখ কৃষকের তথ্য কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে পেয়েছেন যাচাইয়ের জন্য এবং ইতিমধ্যেও ২.৫ লাখ কৃষকের দাবি যথাযথ বলে রাজ্য সরকার কেন্দ্র সরকারকে জানিয়েছে। কিষাণ স্কিমে বাংলার কৃষকের আবেদনের সংখ্যা এবং তথ্য এবং কৃষকদের তথ্য যাচাইয়ের সঠিক পরিসংখ্যান ইত্যাদির সঠিক চিত্র প্রকাশ করার দাবি এআইকেএসসিসি রাজ্য এবং কেন্দ্র, উভয় সরকারের কাছেই জানাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই বিবৃতি সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে এখনও অবধি বাংলার কোন কৃষক কেন্দ্র সরকারের থেকে কিষাণ স্কিমের এক পয়সাও আর্থিক সাহায্য পায়নি। এআইকেএসসিসি’র দাবি যে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকার অবিলম্বে এবং যুদ্ধকালীন তৎপরতায় একে অপরের সাথে সমন্বয় সাধন করুন এবং:

(১) রাজ্য সরকার ১৫ দিনের মধ্যে সমস্ত যোগ্য কৃষকদের নিবন্ধনের জন্য পঞ্চায়েত স্তরে শিবির স্থাপন করুন
(২) নিবন্ধনের ৭ দিনের মধ্যে রাজ্য সরকার যোগ্য কৃষকদের সমস্ত নথি যাচাই সম্পূর্ণ করুন
(৩) কেন্দ্র সরকার বাংলার কৃষকদের বকেয়া দেবার জন্য কিষাণ প্রকল্পে যথাযথ পরিবর্তন করুন
(৪) কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকারের তথ্য যাচাই সম্পূর্ণ হওয়ার ৭ দিনের মধ্যে সমস্ত নিবন্ধিত ও যোগ্য কৃষকদের ১২০০০ টাকার পুরো বকেয়া অর্থ প্রদান করুন

কিছুদিন আগে হলদিয়ায় একটি নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করেছেন যে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরই কিষাণ স্কিমে বাংলার কৃষকের বকেয়া অর্থ মিটিয়ে দেওয়া হবে -  এই অদ্ভুত     ঘোষণায় এআইকেএসসিসি দুঃখ ও হতাশা প্রকাশ করছে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য অনৈতিক, অবৈধ, অসাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সুবিধাবাদের নিদর্শন। সারা ভারতের সব কৃষক যখন তাদের যাকে খুশি ভোট দিয়ে কিষাণ স্কীমের অর্থ পাওয়ার যোগ্য হয়েছেন ও পেয়েছেন, তখন প্রশ্ন উঠছে বাংলার কৃষকরা শুধুমাত্র বিজেপির পক্ষে ভোট দিলে তবেই এই স্কীমে অর্থ পাওয়ার যোগ্য হবেন, এটা কি করে হতে পারেন? কিভাবে প্রধানমন্ত্রী বাংলার কৃষকদের কেন্দ্র সরকারের একটি যোজনার বকেয়ার টাকা পাওয়ার বিষয়টা রাজ্যে বিজেপি’র নির্বাচনী সাফল্যের সাথে জুড়ে দিতে পারেন? বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কোন ভুমিকা বা করনীয় নেই – একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র সরকারই সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন ২২ লক্ষ বাংলার কৃষক কিষাণ স্কিমে   নিবন্ধন করিয়েছেন - প্রধানমন্ত্রী তাদের কীভাবে বঞ্চিত করতে পারবেন?

যাতে বাংলার কৃষকদের কিষাণ স্কিমের টাকা পাবার দাবি রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার অবিলম্বে মেনে নেন, আইআইকেএসসিসি’র শরিক সংগঠনগুলো রাজ্যব্যাপী *"কিষাণ অধিকার যাত্রা”* ঘোষণা করেছে। প্রথম যাত্রা ১০-১২ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনে হবে এবং তারপর বাংলার সব জেলাতে হবে। এছাড়াও, এআইকেএসসিসি’র শরিক সংগঠনগুলো বাংলার সমস্ত জেলার পঞ্চায়েত, ব্লক ও জেলা স্তরে কৃষকদের নিয়ে গণ-বিক্ষোভ সংগঠিত করবে। এআইকেএসসিসি প্রধানমন্ত্রী, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী,  বাংলার সব সাংসদ ও বিধায়কদের কাছেও দাবিপত্র পাঠাবে যাতে তারা বাংলার কৃষকদের সমস্ত পাওনা টাকা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে করেন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

**বসন্ত রঙে মেতে উঠল বেলঘড়িয়া নিউ বাসুদেবপুর রোড অধিবাসী**

পূর্ব কলকাতায় গাঙ্গোর মহোৎসব উদযাপন :

*নাদের পরিচালনায় আয়োজিত হলো "সার্বজনীন রবীন্দ্রনাথ" নামে অনুষ্ঠান **