*বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের**" শারদ অর্ঘ্য*" *দুর্গা দুর্গতিনাশিনী*



মহালয়ার এক মাস পরে পুজো! এমনও হয়? এখন দেখছি, হয়! এ বছর মহালয়ার পরে 'মলমাস' পড়েছে। পুজোও তাই দেরিতে। 

মাসের আর কী দোষ, এই বছরটাকে দেখুন। কোনও দিন ভেবেছিলাম, দিন কাটবে ঘরবন্দি হয়ে! মুখোশের আড়ালে,নিতান্তই বাইরে বেরোতে হলে নাকমুখ ঢেকে, আরও সতর্ক হলে হাতে দস্তানা, মাথায় টুপি পরে। বাড়ি ফিরে নিজেকে, নিজের চশমা-ঘড়ি-জামাকাপড়-মোবাইলকে জীবাণুমুক্ত করার দীর্ঘ প্রক্রিয়া... ভেবেছিলাম এমন?

কিছু দিন আগে মহালয়ার ভোরে শুনতে পেয়েছিলাম বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠ।  ধীরেসুস্থে জেগে ওঠা পাড়ার কলরবের মধ্যে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সবাই আমরা শুনতে পেলাম। কিন্তু একটা শূন্যতা থেকে যাচ্ছে।  চির-চেনা কণ্ঠে চন্ডীপাঠ ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে...’ এই মহালয়া শুনে এবার যেন মনে হচ্ছে পুজো আসছে! 

 ‘‘বাজলো তোমার আলোর বেণু’’ শুরু হতেই ঘরে পিন-পতনের নৈঃশব্দ্য। 

কিন্তু কী হবে এই বছরে? দুনিয়া কাঁপাচ্ছে কোভিড অতিমারি। ভয় দেখাচ্ছে রোগ-মৃত্যু। কোথাও যাওয়ার নেই, কিচ্ছু করার নেই। প্রিয়জনের মুখ দেখা নেই। কী ভাবে হবে শারদোৎসব? প্যান্ডেলে অঞ্জলি দেওয়া, রাত জেগে ঠাকুর দেখার কী হবে, উৎসবের অঙ্গনে কতটা কাটছাঁট অপেক্ষা করছে, এখনও কেউ ঠিক জানি না। 

তবে এটুকু সবাই জানি, এ বছর স্বাস্থ্যবিধির ভীষণ কড়াকড়ি জারি থাকলেও, পুরনো কিছু প্রিয় অভ্যাস বাদ দিতে হলেও বোধন, অঞ্জলি, সন্ধিপুজো থাকবে। মহালয়ার স্বপ্নের ভোর থেকেই যার সূচনা। এ বারের মহালয়ায় রেডিয়ো বা মোবাইল ঘিরে একটু দূরে-দূরেই না-হয় বসা হয়েছিল। ঠিক ওই ভাবে দুর্গাপুজোর সময় ও আমরা সবাই সরকারি বিধি নিষেধ মেনে মায়ের পুজোতে থাকবো,তবু প্রতি বছরের মতোই দেবীর আত্মপরিচয় দানের মন্ত্রে গায়ে কাঁটা দেবে সবার--- 

"অহং রুদ্রেভির্বসুভিশ্চরাম্যহম্‌
        আদিত্যৈরুত বিশ্বদেবৈঃ ।
অহং মিত্রাবরুণোভা বিভর্ম্যহম্‌
 ইন্দ্রাগ্নী অহমশ্বিনোভা ।।"

সময়ের দাবি মেনে, নিজের ও অন্যের মঙ্গলের কথা ভেবে উৎসব উদযাপনে এই বদলটুকুতে ক্ষতি তো নেই। 

কোভিড-পর্বের শুরু থেকেই সম্পূর্ণ ডিজিটাল মাধ্যমে, পারস্পরিক দূরত্ববিধি মেনে একের পর এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছে 'বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন' ও 'কলকাতা সাংস্কৃতিক অঙ্গন'। সহযোগিতায় রয়েছে "আন্তরিক"শিল্পী সংস্থা, এর আগে অনুষ্ঠিত হয়েছে,বাংলা নববর্ষ, রবীন্দ্রজয়ন্তী, বাইশে শ্রাবণ,মহালয়া, বর্ষা-বরণ---  সংস্থার সদস্যদের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের প্রথিতযশা শিল্পীরাও যোগ দিয়েছেন এই সব অনুষ্ঠানে। বিপুল সমাদর মিলেছে দর্শকমহলে। ফেসবুক ও ইউটিউবে সেই অনুষ্ঠানের ফুটেজ রাখা আছে সযত্নে। 

এ বারের নিবেদন:"শারদ অর্ঘ্য " "দুর্গা দুর্গতিনাশিনী"। 

দুর্গাপুজো উপলক্ষে বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের দীর্ঘ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে।  এই বিশেষ পর্বে  থাকছে দেশ বিদেশের বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশন, এ ছাড়া কলকাতার কিছু বনেদি প্রাচীন বাড়ির পুজো, পশ্চিম বঙ্গের জেলার বনেদিবাড়ীর পুজো, রাঁচি, জামশেদপুর, ত্রিপুরার বনেদিবাড়ীর পুজো,  বাংলাদেশ এর ঢাকা, চট্টগ্রাম এর পুজো ও ইউরোপ, আমেরিকার পুজো, সঙ্গে থাকছে পুজো ঘিরে নানান অনুষ্ঠান"|  শারদ অর্ঘ্য, দুর্গা দুর্গতিনাশিনী"। 

পঞ্চমীর দিনের সন্ধ্যায় শুরু হবে
" শারদ অর্ঘ্য "
 সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তির মেলবন্ধনে এই নিবেদনও প্রস্তুত হবে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিন মাধ্যমে। শিল্পীরাও থাকবেন যে যাঁর বাড়িতে। কিন্তু রয়ে যাবে দূরে থেকেও পাশাপাশি বেঁধে-বেঁধে থাকার মূল সুরটি। 

আর রয়ে যাবে প্রার্থনা। আনন্দময়ী, অসুরবিনাশিনী মহামায়ার পদধ্বনি যেন মুছে দেয় এই দুঃসময়। "জাগো, জাগো মা!"
শারদ অর্ঘ্যের আমন্ত্রিত শিল্পীরা কোলকাতা থেকে, শ্রাবনী সেন, ইন্দ্রানী সেন,মোহন সিং খানগুরা, দূর্বা সিং খানগুরা, প্রণতি ঠাকুর, মনোজ মুরালী নায়ার,কবি হাসমত জালাল, মধুমিতা বসু, চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত,পলি গুহ, সেজুতি গুহ রায়,ডাক্তার অগ্নিমিত্রা গিরি সরকার,শুভময় সেন,ড: তানিয়া দাস,ডাক্তার উৎসব দাস, জয়িতা বিশ্বাস, সোহিনী হালদার, পিলু ভট্টাচাৰ্য,কাকলি চক্রবর্তী, এষা ব্যানার্জী সেনগুপ্ত,সঞ্চিতা সরকার,উমা মন্ডল,শিঞ্জিনী বিশ্বাস, কাজল গুপ্ত, অর্ণব বসাক(সুরকার),গোপাল দাস(সুরকার) শান্তিনিকেতন থেকে দুলান মাহুলী,বাংলাদেশ এর ঢাকা থেকে, বুলবুল মহলানবীশ, বর্ণালী সরকার, আবুবকর সিদ্দিক, মৃদুলা সমাদ্দার, পূজন দাস, আল্পনা রায় বসাক, স্বর্ণময়ী মন্ডল, কাজল দেবনাথ,সোমা সেন শর্মা,অর্চনা মালাকার,জুলি শর্মিলী,পীযুষ ইসলাম,মহোসনা হোসেন ইলোরা,চট্টগ্রাম থেকে প্রিয়া ভৌমিক, জুয়েল আর কে চক্রবর্তী, কঙ্কন দাস,সুবর্ণা রহমান,
ফ্লোরিডা থেকে, বিজয়া সেনগুপ্তা, নরওয়ে থেকে  আইরিন সরকার, ইংল্যান্ড থেকে ফয়সাল আহমেদ, কানাডা থেকে মুনিরা সুলতানা মিলি,আমেরিকার বোস্টন থেকে স্বপ্না রায়, ড: রাহুল রায়,ড:সৌমিত্র পাল,ড:দোলা সেনগুপ্ত,আমেরিকার আইডাহো থেকে
ফারজাহান রহমান শাওন,জামশেদপুর থেকে চন্দনা চৌধুরী, বাণীপ্রসাদ মুখার্জী, রাঁচি থেকে রিঙ্কু ব্যানার্জী, মানস ব্যানার্জী, অপরাজিতা ভট্টাচাৰ্য,
ত্রিপুরা থেকে স্বর্নিমা রায়, গীতশ্রী ভৌমিক,ড:আশীষ বৈদ্য প্রমুখ l
 
-------

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

**বসন্ত রঙে মেতে উঠল বেলঘড়িয়া নিউ বাসুদেবপুর রোড অধিবাসী**

পূর্ব কলকাতায় গাঙ্গোর মহোৎসব উদযাপন :

**বাংলার সন্মান বেঙ্গল এক্সিলেন্সি অ্যাওয়ার্ড ২০২০**